logo

রানাপাড়া জৌগ্রামে রক্তদান শিবির, মোট 210 ইউনিট রক্ত সংগ্রহ

আজ রানাপাড়া জৌগ্রাম আলু ব্যবসায়ী সমিতি এবং ধুলুক নেতাজি ক্লাবের উদ্যোগে দুটি পৃথক রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় মানুষ এবং বিভিন্ন সংগঠন থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেছে। রানাপাড়া জৌগ্রাম আলু ব্যবসায়ী সমিতি আয়োজিত মূল শিবিরে প্রায় 160 জন রক্তদাতা উপস্থিত ছিলেন, এবং ধুলুক নেতাজি ক্লাবের অনুষ্ঠানে প্রায় 50 জন রক্তদান করেছেন। উভয় শিবির মিলিয়ে মোট 210 ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে।

শিবিরের সূচনা অতিথিদের দ্বারা প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে হয়। রানাপাড়া অনুষ্ঠানে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মেহমুদ খান, আবুজহাটি এলাকার প্রধান ঝর্ণা দাস এবং জৌগ্রাম এলাকার তৃণমূল সভাপতি মৃদুল কান্তি মণ্ডল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মেহমুদ খান তাঁর বক্তৃতায় বলেন, "রক্তদান জীবনদান। এই ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ড সমাজে ইতিবাচক বার্তা প্রচার করে।" তিনি আয়োজক এবং রক্তদানকারীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

শিবিরে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি রক্তদাতার স্বাস্থ্য পরীক্ষা স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা সম্পন্ন করেছেন। শিবিরে নিরাপত্তা মানদণ্ড মেনে রক্তগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা রক্তদাতাদের সচেতন করেছেন যে নিয়মিত রক্তদান করতে হবে এবং রক্তদানকালে নিরাপত্তা বিধি মেনে চলা উচিত।

রানাপাড়া শিবিরের পাশাপাশি ধুলুক নেতাজি ক্লাবের শিবিরেও স্থানীয় বিধায়ক আলোক কুমার মাঝি, ব্লক সভাপতি মেহমুদ খান, প্রধাণ বিকাশ পাড়রে এবং এলাকার সভাপতি জয়দেব দাস উপস্থিত ছিলেন। বিধায়ক মাঝি রক্তদানকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, "কমিউনিটির এমন সহযোগিতার মাধ্যমে জরুরি অবস্থায় মানুষের জীবন রক্ষা সম্ভব।"

উভয় শিবিরে শিক্ষার্থীদের প্রণোদনা দেওয়ার জন্য মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও শীতকালীন সাহায্যের অংশ হিসেবে দরিদ্র পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুশীল ঘোষ জানিয়েছেন যে, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ যা প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় এবং স্থানীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় রক্তের ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

শিবির শেষে সংগৃহীত রক্ত স্থানীয় ব্লাড ব্যাংকে প্রেরণ করা হবে এবং এটি আশেপাশের হাসপাতালগুলোর জরুরি রক্ত সরবরাহে ব্যবহৃত হবে। আয়োজকরা জানিয়েছেন যে, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য এই ধরনের সমবায় উদ্যোগ খুবই প্রয়োজনীয়।

শিবিরে উপস্থিত দাতাদের মধ্যে বিভিন্ন পেশার মানুষ ছিলেন—চিকিৎসক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, ছাত্রছাত্রী, এবং সাধারণ নাগরিক। এই ধরনের অংশগ্রহণ সমাজে রক্তদানকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে তুলে ধরে। স্বেচ্ছাসেবীরা শিবিরের প্রতিটি ধাপের দায়িত্বে ছিলেন—রক্তদাতাদের নিবন্ধন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, রক্ত গ্রহণ এবং শেষে ধন্যবাদ ও প্রণোদনা প্রদান।

স্থানীয় জনগণ এই উদ্যোগকে প্রশংসা করেছেন এবং আগামী বছরও শিবিরে অংশগ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। অনুষ্ঠানটি শুধু রক্তদানই নয়, সামাজিক সংহতি, স্বেচ্ছাসেবী মনোভাব এবং মানবতার বার্তা বহন করেছে।

আজকের উভয় শিবির থেকে সংগৃহীত রক্ত অনেক মানুষের জীবন রক্ষা করবে। আয়োজকরা বলেছেন, "রক্তদান শুধুমাত্র জীবন বাঁচানোর মাধ্যম নয়, এটি মানবতার প্রকৃত প্রকাশ।" এই ধরনের সামাজিক উদ্যোগে অংশগ্রহণ করলে কেবল রক্তপ্রাপকের জীবনই নয়, রক্তদাতার মধ্যে আত্মতৃপ্তি ও সামাজিক দায়বোধ বৃদ্ধি পায়।

উপসংহার হিসেবে বলা যায়, রানাপাড়া জৌগ্রামে অনুষ্ঠিত আজকের রক্তদান শিবির সমাজে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই ধরনের শিবির নিয়মিতভাবে আয়োজন করা হলে, স্থানীয় জনগণ আরও সচেতন হবে এবং রক্তদানের প্রতি উৎসাহ বাড়বে। সমাজের প্রতিটি মানুষ যদি এই ধরনের সামাজিক উদ্যোগে অংশগ্রহণ করে, তবে এটি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করবে এবং একে অন্যের প্রতি সহানুভূতির বার্তা পৌঁছে দেবে

26
844 views